আধুনিক শিক্ষার সর্বনাশা স্রোতে তলিয়ে যাচ্ছে—
আধুনিক শিক্ষার সর্বনাশা স্রোতে তলিয়ে যাচ্ছে—
- আমাদের প্রধান উপকথাগুলো
- পল্লী সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা
- আমাদের প্রাচীন কাব্য সাহিত্য
- আমাদের ধর্মীয় কাব্য সাহিত্য
Answer: পল্লী সাহিত্যের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা
Explanation: বর্ণনাঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁর ‘পল্লীসাহিত্য’ প্রবন্ধে লেখক পল্লীসাহিত্যের প্রাচীন সম্পদগুলোর পরিচয় তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে পল্লীর রূপকথা, উপকথা, প্রবাদ – প্রবচন, ডাক ও খনার বচন, ঘুম পাড়ানি গান, খোকাখুকির ছড়া, খেলাধুলার বাঁধা গৎ ও পল্লীর বিভিন্ন গান আছে। পল্লীর রূপকথা – উপকথাগুলো আরব্য উপন্যাস অথবা চার্লস ল্যাম্ব কর্তৃক অনূদিত শেকসপিয়ারের গল্পগুলো থেকে কম মনোহর নয়। সেগুলো সংগ্রহ করলে বিশ্বকোষের মতো কয়েক বালামে তার স্থান সংকুলান হতো না। পল্লীর বাদ – প্রবচনগুলো, যেমন—‘দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা নেই’, ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’। ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’, ডাক ও খনার বচনে বহু যুগের ভূয়োদর্শনের পরিপক্ব ফল সঞ্চিত হয়ে আছে। জাতির পুরনো ইতিহাসের গোপন কথাও এর মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন—পিঁড়েয় বসে পেঁড়োর খবর’—এই প্রবাদটি সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন পাণ্ড্রুয়া বঙ্গের রাজধানী ছিল। তারপর পল্লীর ছড়া যেমন—‘রৌদ্র হচ্ছে, পানি হচ্ছে/খেঁকশিয়ালীর বিয়ে হচ্ছে’—এগুলো সরস প্রাণের জীবন্ত উৎস। আজ দুঃখ – দৈন্যে মানুষের প্রাণে সুখ নেই বলে লোকে ক্রমেই ছড়া ভুলে যাচ্ছে। আবার খেলাধুলার বাঁধা বুলি যেমন—‘এক হাত বোল্লা, বারো হাত শিং/ উড়ে যায় বোল্লা ধা তিং তিং’—বিদেশি খেলা প্রচলনের সঙ্গে সঙ্গে এগুলোও লোপ পাওয়ার উপক্রম করেছে। পল্লীর জারি, ভাটিয়ালি, রাখালি, মারফতি গানগুলো, যা অমূল্য রতন বিশেষ, সেগুলোও আজ শহুরে সমাজে অপাঙেক্তয়, অবহেলিত অথচ ‘মনমাঝি তোর বৈঠা নে রে / আমি আর বাইতে পারলাম না’—এ গানটির সঙ্গে শহুরে গানের কোনো তুলনাই চলে না। অথচ পল্লীর এই প্রাচীন সাহিত্য সম্পদগুলো ধারাবাহিকভাবে সংগ্রহের কোনো চেষ্টায় চলছে না। উদ্দীপকের ঐশী – শশীর ডাক্তার মা মেয়েদের বিদেশি গল্পের অনুবাদ শোনান বলে ওরা দাদির মুখে উপকথা – রূপকথা শুনতে পারছে না। আর ওগুলো ক্রমেই বিস্মৃতির অতলগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে শুধু এটুকুই বলা হয়েছে।
Leave a Reply